সরকারি চাকরির গ্রেড আগে ছিল ৪ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিল
এখন ২০ গ্রেডে চারটি শ্রেণিতে বিভক্ত।
আগের প্রথম শ্রেণি > বর্তমানে সেটা ১ম থেকে ৯ম গ্রেড
আগের দ্বিতীয় শ্রেণি > বর্তমানে শুধু ১০ম গ্রেড
আগের তৃতীয় শ্রেণি > বর্তমানে ১১-১৬ তম গ্রেড আগের চতুর্থ শ্রেণি > বর্তমানে ১৭-২০ তম গ্রেড এবং সর্বশেষ গ্রেড।
যিনি ১ থেকে ৯ নং গ্রেডে > প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা বা গেজেটেড অফিসার বা ক্যাডার।
এদের নিয়োগের সময় সরকারি গেজেট বা বিজ্ঞপ্তি বের হয়, স্বয়ং প্রেসিডেন্ট এদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। সামগ্রিক দিক বিবেচনায় মান মর্যাদা, দায়িত্ব-কর্তব্যের পরিধি এবং সুযোগ সুবিধার দিক দিয়ে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড অফিসারগণ তুলনামূলক ভালো অবস্থানে থাকেন। তার উপরে আছে সচিব/মূখ্য সচিব।
পিএসসি কর্তৃক নিয়োগকৃত ২৬ ধরণের চাকরিকে ক্যাডার এবং পিএসসি কর্তৃক নিয়োগকৃত অন্যান্য সরকারি চাকরিকে নন-ক্যাডার জব বলা হয়।
নন-ক্যাডার জব গ্রেড ৯ হলে ১ম শ্রেণি এবং গ্রেড ১০ হলে ২য় শ্রেণি বলা হয়
ক্যাডার আর নন-ক্যাডার জব এর মধ্যে মূল পার্থক্য:
১// ক্যাডারগণ প্রমোশন পেয়ে নীতিনির্ধারক পর্যায়ে যেতে পারেন।
২// নন-ক্যাডারগণ প্রমোশন যেতে পারেন না অর্থাৎ ননক্যাডার একটি ব্লক পোস্ট।
বিসিএস ক্যাডার মূলত দুই প্রকার:
ক.জেনারেল (পুলিশ, এডমিন, পররাষ্ট্র ইত্যাদি)
খ.টেকনিক্যাল (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, সড়ক ও জনপদ ইত্যাদি)।
পার্থক্য:
জেনারেল ক্যাডারে যে কেউ যে কোন সাবজেক্ট থেকে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি করতে পারেন
টেকনিক্যাল ক্যাডারে চাকরি করতে হলে নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা লাগবে। যেমন, ডাক্তার হতে এমবিবিএস ডিগ্রি।
চেনার উপায়:
সরকারি যে কোন অফিসে ৪ ধরনের স্টাফ থাকে>
১ম স্তরে > ক্যাডার (গেজেটেড কর্মকর্তা )
২য় স্তরে> কর্মকর্তা (গেজেটেড কর্মকর্তা )
৩য় স্তরে> কর্মকর্তা
৪র্থ স্তরে> কর্মচারী
প্রথম শ্রেণি মানেই নূন্যতম ৯ম গ্রেড:
সকল ডিপার্টমেন্টের সহকারী পরিচালক (Assistant Director) প্রথম শ্রেণির বাংলাদেশ ব্যাংকের এডি না সব এডিই প্রথম শ্রেণির।
দ্বিতীয় শ্রেণি কেবল ১০ম গ্রেড:
পুলিশের এসআই দ্বিতীয় শ্রেণির এবং প্রাইমারি প্রধান শিক্ষক দ্বিতীয় শ্রেণির। সরকারি হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক দ্বিতীয় শ্রেণির।
তৃতীয় শ্রেণি কেবল ১১-১৬ তম গ্রেড : প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক তৃতীয় শ্রেণির এবং সকল ডিপার্টমেন্টের অফিস সহকারী, কম্পিটার অপারেটর/ সাঁট মুদ্রাক্ষরিক তৃতীয় শ্রেণির।
চতুর্থ শ্রেণি কেবল ১৭-২০ তম গ্রেড:
অফিস সহায়ক চতুর্থ শ্রেণির যার স্কেল ৮,২৫০ যেমন প্রাইমারি স্কুলের পিওন।
গ্রেডভেদে বেতন ও ভাতা>>>>>>
সর্বনিম্ন মূল বেতন ৮ হাজার ২৫০ টাকা
সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার টাকা
সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৮ হাজার টাকা হলেও বেতন-ভাতাসহ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
সর্বনিম্ন বেতন স্কেল ৮ হাজার ২৫০ টাকা হলেও সব মিলে দাঁড়াবে ২০ হাজার ১০ টাকা।
প্রথম স্কেলে
বাড়িভাড়া মূল বেতনের ৫০ শতাংশ = ৪০ হাজার টাকা।
চিকিৎসাভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা,
ডোমেস্টিক এইড ভাতা ৩ হাজার টাকা,
উৎসব ভাতা ১৩ হাজার ৩৩ টাকা,
আপ্যায়ন ভাতা ৩ হাজার টাকা
শিক্ষা ভাতা ২ হাজার টাকা করা হয়েছে।
সর্বনিম্ন স্কেলে
বাড়িভাড়া ৫ হাজার টাকা,
চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা,
যাতায়াত ভাতা ৩০০ টাকা,
শিক্ষাভাতা ২ হাজার টাকা,
ধোলাই ভাতা ১৫০ টাকা
টিফিন ভাতা ৩০০ টাকা।
স্থানভেদে অন্যান্য ভাতা ও সুবিধাদি
বাড়ি ভাড়া: ৪৫ হাজার টাকা ও এর উর্ধ্বে ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য বাড়ি ভাড়া মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২৮ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা।
চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২৩ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার টাকা।
জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৪০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২১ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৩২ হাজার টাকা। অন্যান্য স্থানের জন্য মূল বেতনের ৩৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১৯ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ২৮ হাজার টাকা। মূল বেতনের ২৫ হাজার টাকা থেকে ৪৪ হাজার ৯৯৯ টাকা পর্যন্ত ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য ৬০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা।
চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১৬ হাজার টাকা।
জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১৩ হাজার টাকা। অন্যান্য স্থানের জন্য মূল বেতনের ৪০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১১ হাজার ৫০০ টাকা। ১৩ হাজার টাকা থেকে ২৪ হাজার ৯৯৯ পর্যন্ত ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য মূল বেতনের ৬৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা।
চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার মূল বেতনের ৫৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৮ হাজার ৫০০ টাকা।
জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৮ হাজার টাকা। অন্যান্য স্থানের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৭ হাজার ২০০ টাকা। ১২ হাজার ৯৯৯ পর্যন্ত ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য মূল বেতনের ৭০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৬ হাজার ৫০০ টাকা।
চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার মূল বেতনের ৬৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৬ হাজার।
জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৬০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৫ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যান্য স্থানের জন্য মূল বেতনের ৫৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৫ হাজার।
চিকিৎসা ভাতা
মাসে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০ টাকা।
বয়সভেদে চিকিৎসাভাতা
অবসরভোগীদের ক্ষেত্রে ৬৫ বছরের কম বয়স্কদের জন্য মাসিক ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা।
৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা।
এর পাশাপাশি সরকার প্রদত্ত ৪০০ টাকা স্বাস্থ্য ও দুর্ঘটনা বীমা এবং জীবন বীমাসহ সরকারি চাকরিজীবীর জন্য বীমা স্কিম চালু।
যাতায়াত ভাতা
দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১০ নাম্বার থেকে ১৬ নাম্বার গ্রেডে যাতায়াত ভাতা মাসে ৩৬০ টাকা।
গাড়ির সুবিধা
পরীক্ষামূলকভাবে ৩ নং গ্রেডের উপরের কর্মকর্তাদের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত।
পাশাপাশি ৪র্থ গ্রেডের কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার বিষয়টি বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
শিক্ষা_সহায়ক ভাতা:
সকল শ্রেণির চাকরিজীবীদের সন্তান
প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা,
২ সন্তানের জন্য ২ হাজার টাকা।
পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীর সন্তানদের ভর্তির জন্য #সরকারি অর্থে পরিচালিত সকল প্রতিষ্ঠানে একটি নির্দিষ্ট কোটা সুবিধা পাচ্ছে।
(বিদ্রঃ বুয়েট কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে এ সুপারিশ প্রযোজ্য হবে না।)
টিফিন ভাতা
মাসে টিফিন ভাতা ৩০০ টাকা। তবে যে সব চাকরিজীবী তাদের প্রতিষ্ঠানে দুপুরের খাবার পান কিংবা দুপুরের খাবারের ভাতা পান তাদের জন্য এ টিফিন ভাতা প্রযোজ্য হবে না।
উৎসব ভাতা
সকল চাকরিজীবীদের জন্য প্রতি বছরে ২ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ উৎসব ভাতা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে একজন অবসরভোগীর জন্য তার মাসিক নিট পেনশনের দ্বিগুণ হারে বছরে ২টি উৎসব ভাতা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
শ্রান্তি বিনোদন ভাতা
সকল শ্রেণির চাকরিজীবীকে প্রতি ২ বছর অন্তর ১৫ দিনের গড় বেতনে অর্জিত ছুটিসহ ১ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা পাবে।
ধোলাই ভাতা
৪র্থ শ্রেণির চাকরিজীবীদের জন্য ধোলাই ভাতা মাসে ১৫০ টাকা পাবেন।
কার্যভার ভাতা
কার্যভার ভাতার শতকরা হার অপরিবর্তিত রেখে সর্বোচ্চ সীমা মাসে ২ হাজার ৫০ টাকা উন্নীত করা।
গৃহকর্মী ভাতা
গৃহকর্মী ভাতা অপরিবর্তীত আছে।
পোশাকপরিচ্ছদ সুবিধা
প্রচলিত নিয়মে পোশাক পরিচ্ছদ প্রাপ্তির সুবিধা রয়েছে
পাহাড়ি ও দুর্গম ভাতা
পার্বত্য এলাকায় কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পাহাড়ি ভাতা পাবেন।
একইভাবে হাওড়-বাওড়, দুর্গম দ্বীপ অঞ্চলে উপকূলীয় ভাতা।
আপ্যায়ন ভাতা
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মূখ্য সচিব ৩ হাজার টাকা,
সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তা ২ হাজার ৫০০ টাকা
অতিরিক্ত সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তা ২ হাজার টাকা,
যুগ্ম সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তারা ১ হাজার ৫০০টাকা।
ভ্রমণ ভাতা
বদলিজনিত ভ্রমণ ভাতা এককালীন
সড়ক পথে ১০০ কি.মি. পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা,
১০১ থেকে ২০০ কি.মি. পর্যন্ত ১৫ হাজার ৫০০ টাকা
২০১ থেকে এর বেশি কি.মি. হলে ২০ হাজার টাকা
বিশেষ ভাতা
বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এসএসএফ ইত্যাদি বিভিন্ন সার্ভিসের জন্য বিশেষভাতা বেতন ভাতা।
আবাসন ও গৃহ নির্মাণ ঋণ
গ্রেড অনুযায়ী ১২ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা গৃহ ঋণ
সুদের হার হবে ব্যাংক রেটে ৫ শতাংশ।
৮ম থেকে ১ম গ্রেড স্কেলের কর্মকর্তাদের ২০ জনের জন্য ১০ কাঠা ও অন্যান্য চাকরিজীবী প্রতি ২০ জনের জন্য ৮ কাঠা প্লট সুবিধা।
এছাড়া গবেষণা কাজে নিয়োজিত বিশেষায়িত চাকরিজীবীদের জন্য বেতন কাঠামো আলাদা রাখা।
অনুরোধঃ অনেক পরিশ্রম,সময় ব্যয় করে তথ্য সংগ্রহ,মুদ্রণ,সম্পাদনা করা হয়েছে। আপনাদের সামান্য উপকারে আসবে আশা করি।ভুল হলে ক্ষমার পাশাপাশি সঠিক তথ্যটি কমেন্টে তুলে ধরবেন।
তথ্য সূত্র – সাম্প্রতিক দেশকাল
Share করে সবাইকে জানিয়ে দিন।
Page Link – bdengineer.com
PageLink- Engineers Job in Bangladesh