December 23, 2024
Chicago 12, Melborne City, USA
Admission University

উপাচার্যদের সিদ্ধান্তহীনতায় আর্থিক ক্ষতিতে গুচ্ছের ভর্তিচ্ছুরা

১৭ অক্টোবর থেকে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি আবেদন

গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে নীতি-নির্ধারণী দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয় গত বৃহস্পতিবার। গুচ্ছের টেকনিক্যাল কমিটি ও গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা আলাদা আবেদন করতে হবে ভর্তিচ্ছুদের। এতে ইউনিট (ক, খ, গ) প্রতি আবেদন খরচ হবে ৫০০ টাকা। ফলে একজন শিক্ষার্থীকে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে গুনতে হবে ১১ হাজার টাকা।

যদিও শুরুতে বলা হয়েছিল, গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে একটি আবেদনের মাধ্যমে সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দক্রম দেওয়ার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে নিজ ইউনিটের জন্য কেবলমাত্র ৫০০ টাকা আবেদন ফি দিতে হবে। ভর্তি কমিটি শুরুতে এমন কথা বললেও শেষ পর্যন্ত তাতে অটল থাকতে পারেনি। কমিটির সভার নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা আলাদা আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের। এতে আবেদন প্রতি শিক্ষার্থীদের খরচ হবে ৫০০ টাকা।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে আমাদের আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। পত্রিকায় ভর্তি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে ১৪ অক্টোবর।

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা আলাদা ভাবে আবেদন ফি নিয়ে ভর্তিচ্ছুদের আপত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহবায়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন, প্রতি ইউনিটে ভর্তিচ্ছুরা ৫০০ টাকায় আবেদন করতে পারবেন। এটি কারো একক সিদ্ধান্তে নয় বরং গুচ্ছুভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সকলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

‘গুচ্ছ অনেক বড় পরীক্ষা। তিন লাখের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। ফলে অভিযোগ থাকবেই। অভিযোগ না থাকলেই বরং সমস্যা। অভিযোগ উঠবে সেগুলো আমরা বসে সমাধানের চেষ্টা করবো’- তিনি যোগ করেন।

তিনি আরও জানান, আমরা প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’, ‘খ’ এবং ‘গ’ ইউনিটে আবেদন ফি ৫০০ টাকা করা হয়েছে। আমরা যে আবেদন ফি রেখেছি এটি সর্বনিম্ন। আমরা শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে অনলাইনে আবেদনের ব্যবস্থা করেছি। শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে আবেদন করতে পারবে। এতে তাদের আর্থিক সাশ্রয় হবে। এর চেয়ে কম আবেদন ফি নেওয়া সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।

আমরা শুরু থেকেই প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক পৃথক আবেদনের কথা বলেছি। আমরা কখনোই বলিনি একটি আবেদন করতে হবে। এক আবেদনের যে কথা বলা হচ্ছে এটি কোথা থেকে আসলো সেটি জানা নেই বলেও জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন।

জয় রয় নায়েক নামে খুলনার এক ভর্তিচ্ছু বলেন, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমার গুচ্ছে মার্ক ৫১.৭৫। এখন যদি গুচ্ছের সব ভার্সিটিতে আবেদন করি তাইলে টাকা লাগবে ১১০০০। এখন যদি কোন ভার্সিটিতে সাবজেক্ট আসলো না, ফাও আমার টাকাগুলো গেল। এমতাবস্থায় আমার পরিবারকে কি বোঝাবো? গুচ্ছের কাছে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা আজ জিম্মি।

তন্ময় নামের আরেক ভর্তিচ্ছু বলেন, গুচ্ছ কমিটি আবেদনের টাকা যদি প্রতিটা ভার্সিটির জন্য আলাদা আলাদাভাবে নিতে পারে; তাহলে মেধাতালিকাও প্রতিটা ভার্সিটির জন্য আলাদা আলাদাভাবেই দিতে হবে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি ৫০০ টাকার আবেদনের বিপরীতে একজন শিক্ষার্থী সকল বিশ্ববিদ্যালয়েই আবেদন করতে পারবে। যার ফলে গুচ্ছে পাশ করা সকল শিক্ষার্থী সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবে। এতে করে একজন সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থী ও সর্বনিম্ন পাওয়া শিক্ষার্থী একইসাথে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবে। ফলে প্রক্রিয়াটি হতে যাচ্ছে দীর্ঘ ও সময়সাপেক্ষ। যদিও আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জোর দিয়েই বলা হচ্ছে, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব হয়েছে।

নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে এবছর ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষার্থীদের সহজ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করার উদ্যোগের কথা শুরুতে বললেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করতে পারলো না ভর্তি কমিটি। এর আগে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথকভাবে আবেদন করতে হয়েছিল। এতে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। যার ফলে আশংকা করা হচ্ছে এবারও গুচ্ছের শিক্ষার্থীরা আর্থিক ক্ষতি ও ভোগান্তিতে পড়তে যাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই দেশের ১৯ কেন্দ্রের ৫৭টি ভেন্যুতে একযোগে গুচ্ছের ‘ক’ ইউনিটের, ১৩ আগস্ট মানবিক অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের এবং ২০ আগস্ট বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গুচ্ছের এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ‘ক’ ইউনিটে ৮৫ হাজার ৫৮২ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৪৮ হাজার ১০৬ জন এবং ‘সি’ ইউনিটে ২৩ হাজার ২২৮ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী পাস করেছেন।

Share করে সবাইকে জানিয়ে দিন।

Page Link – bdengineer.com

Page Link- Engineers Job in Bangladesh

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *