bdengineer.com Blog College ভুয়া পরীক্ষার্থীর দুই বছর ও প্রশ্ন ফাঁসে ১০ বছর কারাদণ্ড
College Education Public Exam School

ভুয়া পরীক্ষার্থীর দুই বছর ও প্রশ্ন ফাঁসে ১০ বছর কারাদণ্ড

সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) পরিচালিত কোনো পরীক্ষায় ভুয়া পরিচয়ে অংশ নিলে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে এসংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন বিল-২০২২’ সংসদে উত্থাপন করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন অর্ডিন্যান্সের অধীনে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন এমনভাবে বহাল থাকবে যেন এটি এই আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একজন সভাপতি, অন্তত ছয় জন এবং সর্বোচ্চ ১৫ জন সদস্যের সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হবে। কোনও বিভাগীয় অফিস, জেলা অফিস বা অধস্তন অফিসের কোনও পদ যাতে এই অফিসের প্রধান বা অফিসের অন্য কোনও কর্মকর্তা কর্তৃক নিয়োগ দেওয়া হয় এমন পদে নিয়োগের বিষয়ে কমিশনের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক হবে না। এছাড়া কোনও আইন দিয়ে কমিশনের আওতাবহির্ভূত রাখা হয়েছে এমন কোনও চাকরি বা পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও পিএসসির পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক হবে না।

বিলে বলা হয়েছে, কমিশন প্রজাতন্ত্রের জনবল নিয়োগের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিবিধান সাপেক্ষে পরীক্ষা গ্রহণের পদ্ধতি ও শর্তাবলি নির্ধারণ করতে পারবে। বিদ্যমান আইনে ভুয়া পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বা প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার বিষয়ে কোনও সাজার বিধান ছিল না। নতুন আইনে সেটি যুক্ত করা হয়েছে।

কোনও ব্যক্তি পরীক্ষার্থী না হয়েও নিজেকে পরীক্ষার্থী হিসেবে হাজির করলে বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে পরীক্ষার সময় পরীক্ষার হলে প্রবেশ করলে বা অন্য কোনও ব্যক্তির নামে বা কোনও কল্পিত নামে পরীক্ষায় অংশ নিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর শাস্তি সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড।

বিলে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে পরীক্ষার জন্য প্রণীত কোনও প্রশ্ন লেখা বা ছাপানো কাগজ বা তথ্য, পরীক্ষার জন্য প্রণীত হয়েছে বলে মিথ্যা ধারণা তৈরি করে এমন কোনও প্রশ্ন লেখা কাগজ বা তথ্য, অথবা পরীক্ষার জন্য প্রণীত প্রশ্নের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে বলে বিবেচিত হয় এমন প্রশ্ন লেখা কাগজ বা তথ্য যেকোনও উপায়ে ফাঁস, প্রকাশ বা বিতরণ দণ্ডণীয় অপরাধ। এর শাস্তি সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। এই অপরাধ আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য হবে।

বিলে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি কোনও পরীক্ষা সংক্রান্ত উত্তরপত্র বা এর অংশবিশেষের পরিবর্তে অন্য কোনও উত্তরপত্র বা এর অংশবিশেষ প্রতিস্থাপন করলে বা পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থী কর্তৃক লিখিত হয়নি এ ধরনের উত্তর সংবলিত অতিরিক্ত পৃষ্ঠা কোনও উত্তরপত্রের সঙ্গে সংযোজন করলে তার জন্য দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে।

বিলে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি কোনও পরীক্ষার্থীকে কোনও লিখিত উত্তর, বই, লিখিত কাগজ, পৃষ্ঠা বা এখান থেকে কোনও উদ্ধৃতি পরীক্ষার হলে সরবরাহ করলে বা মৌখিকভাবে বা যান্ত্রিক কোনও ডিভাইসের মাধ্যমে কোনও প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য সহায়তা করলে তার দণ্ড হবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।

বিলের বিধান অনুযায়ী প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি ছাড়া অন্যান্য অপরাধের সাজা মোবাইল কোর্টের আওতাভুক্ত হবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামরিক শাসনামলে জারি করা অধ্যাদেশগুলো পর্যালোচনা করে আইন আকারে বাংলায় প্রণয়নের বিষয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে পাবলিক পরীক্ষা সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দ্য পাবলিক এক্সামিনেশন (অফেনসেস) আইন কার্যকর আছে। এই আইনে পাবলিক পরীক্ষার সংজ্ঞায় পিএসসি আয়োজিত পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এবং পাবলিক পরীক্ষার সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন আয়োজিত পরীক্ষার মিল না থাকায় প্রস্তাবিত আইনে পিএসসির আওতায় অনুষ্ঠিত পরীক্ষা সংক্রান্ত অপরাধ ও শাস্তির বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এর আগে বিলটি উত্থাপনে আপত্তি জানান বিএনপির সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ। তিনি সব ধরনের চাকরি, মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে দাবি করে বলেন, ‘দক্ষ জনবল নিয়োগের বিকল্প নেই। কিন্তু সরকারি চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্য-উপযুক্ত বিবেচিত হওয়ার পর পুলিশি যাচাইয়ের নামে ভিন্নমতের প্রার্থীদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটি প্রতিকারের বিষয়ে আইনে কিছু নেই। ’

এ সময় তিনি পরীক্ষাসংক্রান্ত অপরাধের জন্য আলাদা আলাদা আইন না করে অভিন্ন একটি আইন করার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘মেডিক্যাল, এসএসসি, এইচএসসি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। ’

বিএনপির এমপি হারুন বলেন, ‘সম্প্রতি তথ্যসচিবকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। তাকে কেন বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে তা নিয়ে বিভিন্ন কথা গণমাধ্যমে এসেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে হলে দলীয় বিবেচনা বাদ দিতে হবে।’

Share করে সবাইকে জানিয়ে দিন।

Page Link- Engineers Job in Bangladesh
.
Page Link- Diploma Engineers of Bangladesh

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version