গত মাসে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরে শিবচরে সংগঠিত মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিটিউট (এআরআই)।
এই দুর্ঘটনার মূল কারণ মনে করা হচ্ছে, বাসের টায়ার ফেটে যাওয়া। এছাড়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে নিরাপদ বেষ্টনী না থাকার জন্য ১৯ জন যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ভাষ্যনুযায়ী, রাস্তার নিরাপদ বেষ্টনী থাকলে নিহতের সংখ্যা এত বেশি হতো না।
গতকাল রবিবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল বিল্ডিংয়ে অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট-এর পরিচালক ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক তদন্ত প্রতিবেদনে এসব কথা জানান।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাস্তার উপর টায়ারের স্কিড মার্কের অনুপস্থিতি ইঙ্গিত করে যে দুর্ঘটনাটি আকস্মিকভাবে হয়েছিল যা টায়ার ফেটে যাওয়ার কারণে হতে পারে। ব্রেকের ত্রুটির কারণে এটি ঘটেনি। চালকের ডিউটি রোস্টার অনুযায়ী চালকের যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ ছিল। তাই চালকের ক্লান্তি এই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে না। স্পিড ট্র্যাকিং ডেটার উপর ভিত্তি করে (নীচের চিত্র/গ্রাফ দেখুন) বলা যায় যে চালক অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাননি। এমতাবস্থায়, টায়ার ফেটে যাওয়া দুর্ঘটনার সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত কারণ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে।
এআরআই এর অনুসন্ধানলব্ধ তথ্যাবলী (Findings):
১) রাস্তার জ্যামিতিক অবস্থা এবং আনুষঙ্গিক পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ গতিতে চালক গাড়ি চালাচ্ছিল।
২) টায়ার ফেটে যাওয়া দুর্ঘটনার সবচেয়ে সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।
৩) বাস চালকের ক্লান্তি ও তন্দ্রাচ্ছন্নতা দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ নয়।
৪) রাস্তার ধারে টানা গার্ড রেইল ছিল না। যা এই ধরনের ব্যয়বহুল উচ্চ মানের এক্সপ্রেসওয়ের জন্য একটি বড় অসঙ্গতি এবং ঘাটতি।
৫) যান্ত্রিক বা ব্রেকের ত্রুটি দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বিবেচিত না।
৬) যদিও চালক মধ্যম শ্রেণীর লাইসেন্স নিয়ে ড্রাইভিং করছিলেন, তিনি ভারী যানবাহনের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন (এটি প্রক্রিয়াধীন ছিল)।
৭) দুর্ঘটনার আগে ড্রাইভার পথচারীকে আঘাত করেছিল এমন কোন প্রমাণ নেই।
৮) বাসটি নতুন ছিল, দৃশ্যত বাসের অভ্যন্তরীণ এবং বহির্ভাগ ভাল অবস্থায় ছিল। বেশিরভাগ আসন মেঝে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি।
৯) খারাপ আবহাওয়ার জন্য দুর্ঘটনা ঘটেনি। বৃষ্টির তীব্রতা এতটাও ছিলনা যে তা মসৃণ রাস্তায় হাইড্রোগ্ল্যানিং (hydroplaning) ঘটাবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল বিল্ডিংয়ে অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিটিউট সড়কে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেটি গবেষণা করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং সরকারের কোনো ঘাটতি থাকলে সুপারিশপত্র প্রদান করে।
Share করে সবাইকে জানিয়ে দিন।
Join Our Community bdengineer.com
Join Our Community Engineers Job in Bangladesh