প্রিয় সদস্যবৃন্দ,
ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি’ পাসকৃত বা অধ্যায়নরত সরকারি চাকুরি প্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে লেখা।
করণীয়ঃ
০১। ঘুষ দিয়ে চাকুরি নিব, আমার মামা-চাচা, সচিব, এমপি, মন্ত্রী আছে, এমন চিন্তা থেকে প্রথমে বের হয়ে আসতে হবে। আমি ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ২০১৪ সালে পাস করার পর আমার পরিচিত, স্বল্প পরিচিত প্রায় ৫০০ জন কে দেখেছি, যাদের চাকুরি পেতে অতিরিক্ত এক পয়সাও লাগেনি। গাজীপুরের ডুয়েট এলাকায় প্রায় ৩ বছর থাকার সুবাদে এটা দেখার বেশি সুযোগ হয়েছে । কারণ, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ৭০% সরকারি চাকুরি হয় ডুয়েট কেন্দ্রিক (ডুয়েট এর ছাত্র, ডুয়েটে ভর্তিচ্ছু ছাত্র, ডুয়েট এলাকায় বসবাসরত ছাত্র) ।
০২। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকুরি প্রস্তুতির জন্য সেরা জায়গা গাজীপুরের ডুয়েট এলাকা। এছাড়াও ঢাকা, নারায়নগঞ্জে থেকেও প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। ঢাকা থেকে অনেক দূরে বসবাস করলে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় যাতায়াত করতে অনেকের শারীরিক ও আর্থিক সামর্থ্য কুলাবে না।
০৩। গত ৫ বছরে এমন একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী দেখিনি যে, অতিরিক্ত টাকা খরচ করে সরকারি চাকুরি নিতে পেরেছে।
০৪। এমন অনেক দেখেছি, যারা সরকারি চাকুরি পাওয়ার জন্য কয়েক লাখ টাকা প্রস্তুত রেখেছেন, আবেদন করার পর কাউকে টাকা দিয়েছেন অথচ ফলাফলের সময় তার রোল নেই।
০৫। কেউ আবার ভূতকে টাকা দেই। বুঝলেন না?
হাতে টাকা থাকলে সেটা কাউকে না দেয়া পর্যন্ত শান্তি পায় না, মাথা কিলবিল করে। এমন ব্যক্তিদের পেয়ে ভূতরা কয়েক জনের কাছে টাকা নিয়ে চুপচাপ থাকে, ফলাফলের সময় কারো রোল চলে আসলে বলে আমি কাজ করেছি। এই হলো ভূতের ব্যবসা।
০৬। ৬- ১২ মাস কষ্ট করে লেখাপড়া করে আপনাকে চাকুরি পরীক্ষার সিলেবাস গোছাতে হবে। BPSC, MIST, BUET, DPI, DU, AUST এর প্রশ্নপত্রের ধরণ অনেকটা আলাদা। পরীক্ষার ১০-১৫ দিন আগে যখন জানতে পারবেন প্রশ্নপত্র কোন প্রতিষ্ঠান প্রণয়ণ করলো সে অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে হবে।
০৭। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স থাকলে চাকুরি না পাওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে হবে। পদ সংখ্যা একটা হলেও আবেদন করতে হবে এবং প্রতিটা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
০৮। আমি সেপ্টেম্বর/২০১৪ থেকে নভেম্বর/২০১৬ পর্যন্ত ৩০ টা আবেদন করি। ১৭ টা আবেদনের বিপরীতে ২২ বার পরীক্ষার কক্ষে উপস্থিত হয়। ফলাফল দুইটা চাকুরির সুপারিশ।
০৯। দুইটা নথি (ফাইল) এবং একটা নোট খাতা প্রথম থেকেই সংরক্ষণ করতে হবে। একটা ফাইলে প্রতিটা নিয়োগ বিজ্ঞপি এবং অপর ফাইলে এপ্লিকেন্ট কপি ও প্রবেশপত্র সংরক্ষণ করতে হবে। নোট খাতায় পদের নাম, দফতর, পদ সংখ্যা, বিজ্ঞপ্তি নম্বর, ইউজার আইডি, পাসওয়ার্ড, রোল নম্বর ইত্যাদি সংরক্ষণ করা যেতে পারে। প্রথম থেকেই এভাবে সংরক্ষণ না করলে যখন অনেকগুলো আবেদন করা হয়ে যাবে, তখন এলোমেলো হয়ে যাবেন।
.
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন!
From- Md Delwar Hossen
Sub-Assistant Engineer (Civil) at Public Works Department