bdengineer.com Blog Public University পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাড়তি কাজের ভাতা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে
Public University UGC University

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাড়তি কাজের ভাতা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাড়তি কাজের ভাতা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের পাঠদানের বাইরে বিভিন্ন বাড়তি কাজের জন্য ভাতা ও সম্মানীর পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি পরীক্ষার খাতা দেখার ফিও থাকবে নির্ধারিত।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও ম্যানুয়াল।’ এ নীতিমালার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো বাড়তি টাকা কাউকে দিতে পারবে না। নীতিমালার কোনো ব্যত্যয় ঘটলে তা আর্থিক অনিয়ম হিসেবে চিহ্নিত হবে।

জানাগেছে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকরা পাঠদানের বাইরেও নানা দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে রয়েছে- প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন, পরীক্ষা নেওয়া, ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্ব পালন, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা কমিটিতে বহিঃবিশেষজ্ঞ (এক্সপার্ট) হিসেবে কাজ করাসহ আবাসিক হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ, বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও ডিনের দায়িত্ব পালন। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল, সিনেট, সিন্ডিকেটের সদস্যসহ বিভিন্ন কমিটিতে কাজ করেন শিক্ষকরা।

এসব দায়িত্ব পালনের জন্য তারা কী পরিমাণ টাকা সম্মানী হিসেবে প্রাপ্য হবেন, তা নির্ধারণ করা হচ্ছে। ইউজিসি সূত্র জানায়, মূলত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক অনিয়ম রোধে এ নীতিমালা প্রণীত হচ্ছে। এই নীতিমালা পাস হলে শিক্ষকদের সব ধরনের ভাতা এবং সম্মানী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য হবে এক ও অভিন্ন। এরই মধ্যে এ নীতিমালার খসড়া প্রণীত হয়েছে।

এ খসড়া অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক ব্যবস্থাপনার সাধারণ নীতিমালা হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করা হবে। জাতীয় পে-স্কেলের বাইরে এতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অর্থপ্রাপ্তি ও পরিশোধ, হিসাব পরিচালনা, উন্নয়ন বাজেট, আয় বৃদ্ধি ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, বেতন-ভাতা পরিশোধ, পদ সৃষ্টি ও পদ পূরণ, গবেষণা প্রকল্প, ইনস্টিটিউট বা সেন্টারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা, মালামাল/সেবা ক্রয়, মালামাল ব্যবস্থাপনা, ভ্রমণ ভাতা ও দৈনিক ভাতা, অগ্রিম সমন্বয়, হিসাব সংরক্ষণ, নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ এবং সেবা গ্রহণ, জামানত রক্ষণাবেক্ষণ, বার্ষিক হিসাব, হিসাব নিরীক্ষা, সম্মানী/ভাতা/পারিতোষিকের হার নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬৯ পৃষ্ঠার এই নীতিমালার খসড়া গত ৭ আগস্ট শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।

এ নীতিমালা প্রণয়নে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. আবু তাহেরকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিতে অন্যদের মধ্যে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালকদের (অর্থ) রাখা হয়েছে।

১১ সদস্যের এ কমিটি চার দফায় সভা করে খসড়া চূড়ান্ত করেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন আর্থিক নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আর্থিক শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে গত বছরের জুনে ইউজিসির ৪১তম মাসিক সভায় একটি নীতিমালা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। এর আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল তৈরি করা হয়েছে।

নীতিমালায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও সেমিস্টার পরীক্ষায় দুই ঘণ্টায় শিক্ষকদের সম্মানী ৮শ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চার বছরের অনার্স সম্মান কোর্সের ক্ষেত্রে দুই ঘণ্টার পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ৬০ টাকা, তিন ঘণ্টার ক্ষেত্রে ৮০ টাকা, চার ঘণ্টার ক্ষেত্রে প্রস্তাব করা হয়েছে ১০০ টাকা।

এক বছরের মাস্টার্স কোর্সের দুই ঘণ্টার পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে ৭০ টাকা, তিন ঘণ্টার জন্য ১০০ ও চার ঘণ্টার পরীক্ষার খাতার জন্য ১২০ টাকা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যদের সম্মানী ৪ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৪ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করেছে ইউজিসি।
এর বাইরে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্মানী (বিশেষ কাজের ভাতা), পাবলিক প্রকিউরমেন্ট নীতিমালা তৈরি, অগ্রিম আদায় পদ্ধতি, উন্নয়ন কাজের খরচ সমন্বয়, সব সভা ও কমিটির সম্মানী নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এই নীতিমালায়।

নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আবু তাহের বলেন, আর্থিক অভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়নের ফলে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক অনিয়ম রোধ, অর্থের অপচয় বন্ধ, বরাদ্দ অর্থের সর্বোচ্চ ব্যবহার, আর্থিক শৃঙ্খলা ও টাকা খরচের জবাবদিহি নিশ্চিত করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা আনয়নে অনেকাংশে সহায়ক হবে বলেও সংশ্লিস্টরা আশা করছেন।

Share করে সবাইকে জানিয়ে দিন।

PageLink- Engineers Job in Bangladesh
.
Page Link- Diploma Engineers of Bangladesh

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version